কীভাবে জীবিত ছিলেন, জানালেন বিমান দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি



 হমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ-ভারতীয় নাগরিক বিশ্বাস রমেশ কুমার এখনো হতবাক। তিনি দূরদর্শনকে বলেছেন, কীভাবে তিনি বেঁচে ফিরলেন তা তিনি বুঝতে পারছেন না। আজ শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আহমেদাবাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিশ্বাস রমেশ কুমারকে দেখতে গিয়েছিলেন, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

এ সময় রমেশ কুমার বলেন, জানি না আমি কীভাবে জীবিত অবস্থায় বেরিয়ে এসেছি।

দুর্ঘটনার মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে রমেশ কুমার বলেন, আমি ভেবেছিলাম—আমি মারা যাব। কিন্তু যখন আমি চোখ খুললাম, তখন আমি দেখতে পেলাম আমি বেঁচে আছি। আমি আমার সিট বেল্ট খুলে সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম। এয়ারহোস্টেস ও চাচা-চাচী সবাই আমার চোখের সামনে মারা গেছেন।

রমেশ কুমারের আসনটি জরুরি দরজার ঠিক পাশে ছিল। বিমানটি হোস্টেলে আঘাত করার সময় সেই দরজাটি খুলে গিয়েছিল।

হোস্টেলে অবতরণ করেছেন কিনা জানতে চাইলে রমেশ কুমার বলেন, ‘না, আমি মাটির কাছাকাছি ছিলাম, নিচতলায়, যেখানে জায়গা ছিল। তাই আমি সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছি। ভবনের দেয়ালটি বিপরীত দিকে ছিল। আমার মনে হয় না কেউ এভাবে বেরিয়ে আসতে পেরেছে।’

দুর্ঘটনার ভয়াবহ মুহূর্ত

কিছুক্ষণ পরেই বিমানে আগুন লেগে যায় ও তার বাহু পুড়ে যায়। সেই ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে রমেশ কুমার বলেন, ‘আমার চোখের সামনে দুই বিমানসেবিকা...’ এই কথা বলতে গিয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটল জানতে চাইলে রমেশ কুমার বলেন, ‘উড্ডয়নের এক মিনিট পর মনে হয়েছিল বিমানটি আটকে গেছে। তারপর সবুজ ও সাদা আলো জ্বলে উঠল। তারা (পাইলটরা) বিমানটি ওপরে ওঠার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এটি পূর্ণ গতিতে গিয়ে ভবনে বিধ্বস্ত হয়।’

উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়নের মাত্র ১ মিনিটের মধ্যেই এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটি দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে উচ্চতা হারিয়ে মেঘানী নগর এলাকার একটি মেডিকেল কলেজ হোস্টেল ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে ব্যাপক আগুন লাগে ও এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে, যা দুর্ঘটনার সঠিক কারণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আহমেদাবাদ থেকে উড্ডয়ন করা বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমানটিতে ২৪২ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। এর মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, এক জন কানাডিয়ান ও সাতজন পর্তুগিজ নাগরিক। এদের মধ্যে বিশ্বাস রমেশ কুমার ছাড়া বাকি ২৪১ জন যাত্রী নিহত হন।

Comments

Popular posts from this blog

মাগুরার সেই শিশুর ডিএনএ রিপোর্ট থেকে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

বড় বোনের জন্য ছোটো বোনের প্রাণ গেল, সত্য ফাঁ..স করলেন আছিয়ার চাচি

অবশেষে সত্য ঘটনা বললেন আছিয়ার বোন