নিজ অফিসেই শেষ গুলি, এএসপি আত্মহত্যার পেছনে যে কষ্টের গল্প বললেন ভাই

  


র‍্যাব-৭-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পলাশ সাহার মর্মান্তিক আত্মহত্যার ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো পুলিশ প্রশাসনে। বুধবার সকালে নিজের অফিস কক্ষে নিজের সার্ভিস পিস্তল দিয়ে গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। অফিসে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এমন ঘটনা সবাইকে হতবাক করেছে।

পলাশ সাহা ছিলেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বাসিন্দা। কয়েক বছর আগে তিনি ফরিদপুরের চৌধুরীপাড়ায় বিয়ে করেন। তবে বিয়ের পর থেকেই তার পারিবারিক জীবনে চলতে থাকে অশান্তি। স্ত্রী সুস্মিতা সাহা ও মা আরতি সাহার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। স্ত্রী চাইতেন, শাশুড়ি গ্রামে চলে যান, কিন্তু মাকে ছেড়ে দিতে পারছিলেন না পলাশ। এই টানাপোড়েনই তাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।

নন্দলাল সাহা, পলাশ সাহার ভাই জানান, ঘটনার দিন সকালে আবারও স্ত্রী ও মায়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। সেই ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পলাশ। কিছুক্ষণ পর অফিসে গিয়ে নিজের অস্ত্র দিয়ে মাথায় গুলি করেন। তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় অফিস কক্ষ থেকে।

ঘটনার পর পাওয়া চিরকুটে পলাশ লেখেন, কেউ তার মৃত্যুর জন্য দায়ী নয়। তিনি কাউকে সুখে রাখতে পারেননি। তিনি লেখেন, বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইকে দিয়ে যান। দিদিকে দেন সমন্বয়ের দায়িত্ব।

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, এটি আত্মহত্যা বলেই ধারণা করা হচ্ছে। র‍্যাবের মিডিয়া উইং পরিচালক এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী জানান, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে পারিবারিক কলহের বিষয়টি চিরকুট থেকে স্পষ্ট।

এই ঘটনা শুধু একজন পুলিশের আত্মহত্যা নয়, এটি একটি পরিবারের দীর্ঘদিনের মানসিক অশান্তির চূড়ান্ত পরিণতি। কর্মস্থলে শোকের ছায়া, সহকর্মীরা বাকরুদ্ধ। পলাশ সাহার মৃত্যুর মাধ্যমে আবারও সামনে এলো পারিবারিক সম্পর্ক, মানসিক চাপ ও ব্যক্তিগত যন্ত্রণার গুরুত্ব।

Comments

Popular posts from this blog

মাগুরার সেই শিশুর ডিএনএ রিপোর্ট থেকে বেড়িয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

বড় বোনের জন্য ছোটো বোনের প্রাণ গেল, সত্য ফাঁ..স করলেন আছিয়ার চাচি

অবশেষে সত্য ঘটনা বললেন আছিয়ার বোন